Help Line : 01831910346

Help Line : 01831910346
আপনিও হউন সাংবাদিক ।সাংবাদিকতা শিক্ষার সুযোগ । সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি

৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হলো মাশরাফির ব্রেসলেট ।দীর্ঘদিনের সুখ-দুঃখের সাথী।



দীর্ঘদিনের সুখ-দুঃখের সাথী। ডান হাতে সব সময় দেখা যেত স্টিলের ব্রেসলেটটি। করোনাভাইরাস দুর্গতদের সাহায্যে প্রিয় এই ব্রেসলেটটি নিলামে তুলেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়কের ব্যবহৃত ব্রেসলেটটি নিয়ে তুমুল আগ্রহ দেখা যায় নিলামে। শেষ পর্যন্ত ৪২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে ব্রেসলেটটি।

ব্রেসলেটটি কিনে নিয়েছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিএলএফসিএ। নিলামের মাধ্যমে বিক্রি হওয়া কোনো সামগ্রীর এটাই সর্বোচ্চ মূল্য। নিলামে মাশরাফির ব্রেসলেটটির সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ৪০ লাখ টাকা। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাড়িয়ে দিয়েছে আরও ৫ ভাগ। তাতে চূড়ান্ত মূল্য দাঁড়ায় ৪২ লাখ টাকা।

নিলাম থেকে পাওয়া পুরো অর্থ চলে যাবে মাশরাফির ‘নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনে’। সেখান থেকেই করোনাভাইরাস দুর্গতদের সাহায্যে খরচ করা হবে এই অর্থ।

১৬ মে ‘অকশন ফর অ্যাকশনের’ ফেসবুক পেজ থেকে শুরু হয় নিলাম। চলে ১৭ মে রাত ১২টা ৪৫ পর্যন্ত। ব্রেসলেটটির ভিত্তিমূল্য ছিল ৫ লাখ টাকা। নিলাম অুনষ্ঠানে অংশ নেন মাশরাফি। ব্রেসলেটটি কিনে দুস্থ-অসহায় মানুষদের সাহায্য করার সুযোগ করে দেওয়ায় বিএলএফসিএকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক বলেন, ‘আপনিসহ (বিএলএফসিএর চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করা বলা) যারা নিলামে ছিলেন, প্রত্যেককে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা যে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যারা কষ্টে আছে তারা যেন ভালো থাকেন, সেই উদ্দেশেই এটা করা। আমাদের সবার উদ্দেশ্য একই। আশা করি উপরওয়ালা আমাদের এই ইচ্ছাকে কবুল করে নেবেন।’

তবে মাশরাফির হাত খালি হচ্ছে না। ব্রেসলেটটি কিনে নিলেও মাশরাফিকেই সেটা উপহার হিসেবে ফিরিয়ে দিচ্ছে অ্যাসোসিয়েশনটি। বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছেন, ‘ধন্যবাদ মাশরাফি ভাই। আপনি এই দেশকে যে সম্মান এনে দিয়েছেন, সেই সম্মানের প্রতিদান কোনোভাবে হয় না। আমরা এইটুকু করে আপনাকে একটু সম্মানিত করার চেষ্টা করেছি।’

‘এই ব্রেসলেটটা অমূল্য। এটা আপনার খুব প্রিয়। এটা ১৮ বছর ধরে আপনার হাতে আছে। এই ব্রেসলেটটা আপনার হাতেই মানায়। আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যে সংগঠন, আমরা চাই এই ব্রেসলেটটা আপনাকে উপহার দিতে। আপনি আমাদের এই উপহারটা গ্রহণ করুন।’ এরপরই মাশরাফি জানান, ব্রেসলেটটি তারা নিয়ে নিলে কোনো কষ্ট হবে না তার। কারণ এখানে একটাই উদ্দেশ্য, সেটা মানুষকে সাহায্য করা।

ক্যারিয়ারের শুরুতে এই ব্রেসলেটটি ছিল না মাশরাফির। শুরুতে বাংলাদেশ লেখা রিস্ট ব্যান্ড পরতেন তিনি। এরপর বন্ধুর মামাকে দিয়ে ইস্পাতের (স্টিল) এই ব্রেসলেটটি বানিয়ে নেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। ১৮ বছর ধরে ব্যবহার করা এই ব্রেসলেটটিতে খোদাই করে মাশরাফির নাম লেখা রয়েছে।

এরআগে বেশ কয়েকটি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনেকেই তাদের প্রিয় জিনিস নিলামে তুলে করোনাভাইরাস দুর্গতদের সাহায্যে তহবিল গঠন করেছেন। এই কাজটি প্রথম করেছেন সাকিব আল হাসান। ২০১৯ বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়া ব্যাটটি নিলামে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করেন সাবেক নাম্বার ওয়ান এই অলরাউন্ডার।

এরআগেই নিজের ইতিহাস গড়া ব্যাটটি নিলামে তোলার ঘোষণা দেন মুশফিকুর রহিম। যদিও বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০১৩ সালে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিকের ব্যাটটির নিলাম পরে অনুষ্ঠিত হয়। ছয়দিন ধরে চলা নিলামে মুশফিকের ব্যাটটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকায় কিনে নেন পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি।

‘স্পোর্টস ফর লাইফ’- এর ফেসবুক পেজ থেকে আরও কয়েকজন ক্রিকেটারের ক্রিকেট সামগ্রী নিলামে তোলা হয়। এর মধ্যে বিশ্বজয়ী যুব অধিনায়ক আকবর আলীর জার্সি ও ব্যাটিং গ্লাভস বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ভিত্তিমূল্য না পেরোনোয় বিক্রি হয়নি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও নাঈম শেখের ব্যাট।

এরআগে অকশন ফর অ্যাকশনের নিলাম থেকে বিক্রি হয় সৌম্য সরকারের সেঞ্চুরি করা ব্যাট ও তাসকিন আহমেদের হ্যাটট্রিক করা বলটি। সৌম্য ও তাসকিনের ব্যাট-বল সাড়ে ৮ লাখ টাকায় বিক্রি হয়।

প্রয়াত ফুটবলার মোনেম মুন্নার দুটি জার্সি নিলামে তোলের তার স্ত্রী সুরভী মোনেম। জার্সি দুটি বিক্রি হয় ৫ লাখ ১০ হাজার টাকায়। এ ছাড়া জার্সি নিলামে তোলেন রেফারি তৈয়ব হাসান। ২০১৩ সালে নেপালের কাঠমান্ডুতে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম রেফারি হিসেবে সাফের ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনা করেন। সেই জার্সিটি বিক্রি হয় ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকায়।

No comments

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.