Help Line : 01831910346

Help Line : 01831910346
আপনিও হউন সাংবাদিক ।সাংবাদিকতা শিক্ষার সুযোগ । সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি

Journalism


Tutorial : 01
সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি
সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা । এ পেশার প্রতি দুর্বলতা রয়েছে অধিকাংশ সচেতন মানুষের । সাংবাদিকতা পেশায় যেমন রয়েছে ঝুঁকি, তেমন রয়েছে সম্মান ও রোমাঞ্চ। অপ-সাংবাদিকতা বাদ দিলে যে টুকু থাকে তার সব টুকুই আত্মতৃপ্তি পাওয়ার জন্য একটি স্বাধীন পেশা সাংবাদিকতা । আর এই কারনেই সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ আর সাংবাদিকদের জাতির বিবেক বলে আখ্যায়িত করা হয় । এ ছাড়া সংবাদ পত্র রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবেও স্বীকৃত। একজন স নির্ভিক নিরপেক্ষ সাংবাদিক সমাজের কাছে যেমন সমাদৃত তেমন দুর্নীতিবাজ , সন্ত্রাসী , চোরাচালানী, মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ী ও সমাজ বিরোধীদের কাছে আতংক । প্রয়াত কাঙ্গল হরিনাথ, এ কালের নিউজ এজ এর সম্পাদক শ্রদ্ধেয় নুরুল কবীর, মোনাজাত উদ্দীন, শামছুর রহমান কেবলসহ অনেককেই উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করা যায়।
সাংবাদিক হওয়ার যোগ্যতা:
সাংবাদিক হওয়ার জন্য শিক্ষার কোন উল্লেখযোগ্য মাপকাঠি না থাকলেও ভাষা ও বানান সম্পর্কে সতর্ক জ্ঞান থাকা আবশ্যাক । এ ছাড়া যিনি , সাংবাদিকতার মত ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত হতে চান তার থাকতে হবে মানসিক ও শারীরিক যোগ্যতা । একজন সাংবাদিককে হতে হবে মেধাবী , স্মার্ট ও চটপটে । থাকতে হবে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মত ধর্য্য , সাহস ও মানসিকতা । ভদ্রোচিত ব্যবহার সাংবাদিকের একটি বিশেষ গুণ । সাংবাদিককে নিরপেক্ষ হওয়া বাধ্যতামুলক । এ ছাড়া সাংবাদ সরবরাহকারীদের (সোর্স ) কাছে হতে হবে একজন প্রকৃত বন্ধুর মত বিশ্বস্ত। কোন পরিস্থিতিতেই সংবাদের সোর্সের নাম প্রকাশ করা যাবে না । পরিচ্ছন্ন ও মার্জিত পোষাকও একজন সাংবাদিকের গ্রহণযোগ্য করে তোলে।
সংবাদ সংগ্রহ করবেন কোথা থেকেঃ
সংবাদ সংগ্রহের জন্য রয়েছে অনেক উ তা হলো:() পুলিশ স্টেশন থানা / ডিএসবি/ সিআইডি () হাসপাতাল () ফায়ার ব্রিগেড () বিমান বন্দর () নদী বন্দর () রেলওয়ে স্টেশন (৭) কাস্টম অফিস (৮) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসসহ সরকারী ও বে-সরকারী সকল প্রতিষ্ঠান (৯) ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী (১০) প্রেসনোট (১১) প্রেস রিলিজ (১২) হ্যা ন্ড আউট (১৩) সামাজিক সংগঠন (১৪) জেলা প্রশাসন (১৫) উপজেলা প্রশাসন (১৬) ইউনিয়ন পরিষদ (১৭) বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (১৮) বিজিবি (১৯) স্থল বন্দর (২০) এনজিও সহ সমাজের ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি হতে পারে সংবাদের সোর্স ও উ
সংবাদ সংগ্রহের জন্য যা থাকা প্রয়োজনঃ
সংবাদ সংগ্রহের জন্য একজন সাংবাদিকের থাকতে হবে Nose for News অর্থা সংবাদের গন্ধ শুকার মত একটা নাক বা সহজাত ্রবৃত্তি। এর সাথে থাকতে হবে নোটবুক , ক্যামেরা , ভিডিও ক্যামেরা, মিনিক্যাসেট, ফোন, মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার , ই-মেইল, বাইসাইকেল কিংবা মটর সাইকেল । একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার বার্তার সম্পাদকের কাছে শুনেছি , একজন পেশাদার সাংবাদিকের কাছে আর কিছু থাক আর না অন্ততঃ একটি কলম থাকা বাধ্যতামুলক । কলম থাকলে জরুরী কোন সংবাদের তথ্য বাম হাতের তালুতেও লিখে রাখা যায়।
কোন কোন বিষয়ের উপর সংবাদ লিখবেনঃ
আমাদের চারপাশে আমরা যা প্রত্যক্ষ করি তার অধিকংশই সংবাদের বিষয়
হতে পারে। এরপরও নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর সংবাদ লিখলে তা হতে পারে পাঠকের কাছে বিশেষ গ্রহন যোগ্য । যেমনঃ খুন, ধর্ষন, দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই , দূর্ঘটনা , অপহরণ, মাদক ব্যবসা, চোরাচালান , সন্ত্রাস , অগ্নিকান্ড , যৌতুক , আইন্র-শৃংখলা, সমস্যা ও সংকট , পরিবহন, রাসত্মা , কালভার্ট , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান , রোগ-ব্যাধি,চিকিসা, আদালত সংক্রান্ত, ব্যাংক বীমা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, নদ নদী, কৃষি , স্য গোবাদী পশু , সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বিদু, রাজনৈতিক ইত্যাদি বিষয়ের উপর সংবাদ লেখা যেতে পারে। এছাড়া ব্যক্তি গত , সামাজিক নানাবিধ সমস্যা ও তার উত্তরণের উপর সংবাদ লেখা যেতে পারে। সংবাদ সংগ্রহের জন্য অনেক আগে থেকেই সাংবাদিকরা একটি সহজ পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন । এ পদ্ধতিকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘‘ফাইভ ডাব্লুউ ওয়ান এইচ ’’ ফরমুলা। বাংলায় বলা হয় ‘‘ষড় ক’’ ফরমূলা । যেমনঃ (১) কে (২) কবে (৩) কখন (৪) কোথায় (৫) কি ভাবে (৬) কেন।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়ঃ র্সোস জানালেন , এক ব্যক্তি খুন হয়েছে। ‘‘ষড় ক’’ ফরমূলায় একজন সাংবাদিক সোর্সের কাছে প্রশ্ন করবেন এই ভাবেঃ (ক) কে খুন হয়েছে (খ) কবে খুন হয়েছে (গ) কখন খুন হয়েছে (ঘ) কোথায় খুন হয়েছে (ঙ) কি ভাবে খুন হলো (চ) কে খুন করলো। প্রশ্ন গুলোর উত্তর সঠিক নিয়মে সাবলীল ভাষায় লিখলেই সংবাদ হয়ে যাবে।
সোর্স নিয়োগে সতর্কতাঃ
তিনিই হবেন একজন জনপ্রিয় সাংবাদিক যার রয়েছে সর্বস্তরে সোর্স। তবে সোর্স নিয়োগের ক্ষেত্রে অবলম্বন করতে হবে বিশেষ সতকর্তা। সোর্স নিয়োগের পূর্বে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার জ্ঞান কতটুকু এবং তিনি ঐ সংবাদের ব্যাপারে কতটা নিরপেক্ষ তা যাচাই করে নিতে হবে। নইলে ভুল তথ্যের জন্য আপনার কষ্ট করে লেখা সংবাদটি গ্রহন যোগ্যতা হারাতে পারে। আবার আপনার সম্পর্কে মানুষের মাঝে জন্মাতে পারে ভ্রান্ত ধারণা।
কি ভাবে সংবাদ লিখবেনঃ
আধুনিক ইলেকট্রনিক্স যুগে সংবাদ পত্রের পুরাতন ধ্যান ধারণা অনেকটা পাল্টিয়েছে। সংবাদ লেখার অনেকটা নিয়ম কানুনেরও ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে । তবে সংবাদ লেখার প্রথমেই ঠিক করে নিতে হবে ‘‘সংবাদ শিরোনাম ’’ সংক্ষিপ্তাকারে চমকপ্রদ বাক্যে লিখতে হবে শিরোনাম । যাতে পাঠকের সংবাদ পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এরপর লিখতে হবে ‘‘সূচনা সংবাদ’’। ইংরেজিতে যাকে ‘‘ইনট্রো’’ বলে। সূচনা সংবাদ হলো পুরো সংবাদের সংক্ষিপ্ত সার আর এটি ৩৬ শব্দের মধ্যে হতে হবে। সূচনা সংবাদ পড়েই পাঠক বুঝতে পারবে সংবাদের পুরো বিষয় বস্তু। সংবাদ লেখার শব্দ ও বাক্য হতে হবে সহজ সরল ও বোধগম্য । ছোট ছোট বাক্যে সাবলীল ভাষায় লেখা হলে পাঠকরা পড়ে স্বস্তি পাবে। সাংবাদটি অবশ্যই তথ্য নির্ভর হতে হবে। অনুমান কিংবা আবেগের কোন স্থান নেই এখানে । সংবাদের মধ্যে যিনি যত বেশী তথ্য সংযোজন করতে পারবেন তার সংবাদটি পাঠকের কাছে ততবেশী গ্রহণযোগ্য হবে।
বলা যাবে না আজ কোন সংবাদ নেই :
খুন-খারাবী ,ধর্ষণ ,ত্রাস , নারী নির্যাতন, বোমা হামলা, আত্নহত্যা , অপহরণ , সংঘাত সংঘর্ষ, দূর্ঘটনা, চূরি-ডাকাতি, ছিনতাই, গ্রেফতার, অগ্নিকান্ড, বা কোন ঘটনা না ঘটলে সেদিন আমরা বলে থাকি আজ কোন সংবাদ নেই। একজন পেশাদার সাংবাদিকের জন্য এই কথাটি বড় লজ্জাষ্কর। আমি প্রখ্যাত সাংবাদিকদের কাছে শুনেছি , যিনি পেশাদার সাংবাদিক তিনি ভুলেও বলতে পারবেন না আজ কোন সংবাদ নেই । প্রতিদিন ঘটে যাওয়া ঘটনাই শুধু সংবাদ নয়। ‘‘পৌরসভার ড্রেন পরিস্কার না করার কারনে মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে, নাগরিকরা অতিষ্ঠ’’ কিম্বা “বেঞ্চের অভাবে মাটিতে বসে ছাত্র/ছাত্রীরা লেখা-পড়া করছে” ভাবুন তো এটা কি কম গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ?
ক্রাইম রিপোর্ট লেখার কৌশলঃ
ক্রাইম রিপোর্ট সংবাদ পত্রের জন্য একটি গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়। ক্রাইম রিপোর্ট একজন সাংদিককে রাতারাতি জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যেতে পারে। আবার ভুল তথ্যের কারণে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন ।‌‌‍‍‍‌‌ তাই ক্রাইম রিপোর্ট লেখার আগে সাংবাদিককে চরম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সর্ব প্রথম যা করতে হবে তা হলো, যার বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে যে তথ্য আছে তা গোপনে সংগ্রহ করতে হবে। সম্ভব হলে সকল ডক্যুমেন্ট, (ছবি,পেপার,ভিডিও) নিজ আয়ত্বে আনতে হবে। তথ্য সংগ্রহ করা শেষ হলে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার বক্তব্য অব্যশই গ্রহন করতে হবে। (বক্তব্য ক্যাসেট বন্দী করতে পারলে ভালো হয়) কোন কথা বলতে না চাইলে সে কথাও নিউজের মধ্যে উল্লেখ করতে হবে। সংবাদিকের নিজের কোন কথা সংবাদের মধ্যে সংযোজন না করায় উত্তম। ডক্যুমেন্ট ও সূত্রের কাঁধে ভর করে সংবাদ লিখতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য সংবাদের মধ্যে গুরুত্ব সহকারে লিখতে হবে। প্রতিবেদকের কাছে যদি তার বক্তব্য খন্ডন করার মত উপযুক্ত প্রমান থাকে তাহলে‘‘ প্রতিবেদকের ভাষ্য’’ হিসেবে তা সংবাদের মধ্যে উপস্থাপন করা বাঞ্চনীয়।
সংবাদ লেখা ও প্রকাশের পর সাংবাদিকের করণীয়ঃ
সংবাদ লেখার পর কমপক্ষে একবার সংবাদটি ভাল করে পড়তে হবে। বানান ভুল হলে, তথ্য বাদ পড়লে বা বাক্য অসম্পুর্ণ থাকলে তা সংশোধন করে পত্রিকায় পাঠাতে হবে। প্রেরিত সংবাদের ফটোকপি অথবা ই-মেইল অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর তা মিলিয়ে দেখতে হবে লেখা সংবাদটি হুবহু ছাপা হয়েছে নাকি এডিট করা হয়েছে । যদি এডিট করা হয়ে থাকে তবে পরবর্তীতে সংবাদ লেখার সময় ক্রটিগুলো সংশোধন করা সুবিধা হবে।
ভালো সাংবাদিক হওয়ার উপায়:
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদই একজন সাংবাদিককে সমাজের কাছে গ্রহণয্যেগ্য করে তুলতে পারে। এ ক্ষেত্রে নৈতিকতার বিষয়টি অগ্রগন্য । এছাড়া ভালো রিপোর্টার বা ভালো সাংবাদিক হতে হলে নিয়মিত সংবাদ বিষয়ক বই ও পত্রিকা পড়তে হবে । যে সংবাদগুলো তথ্য হিসেবে ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারে তা সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতিদিনের ঘটনা ডাইরীতে লিপিবদ্ধ করতে হবে। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার বিষয়ে বই পত্র সংগ্রহ করে তা নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। সাংবাদিকতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে । প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে এবং তাদের লেখা সংবাদ অনুস্মরণ করতে হবে।
লেখকের কথাঃ
যে সংবাদই লেখা হোক না কেন তা হতে হবে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ। যিনি সাংবাদিকতার মত মহান পেশায় নিজেকে নিয়জিত করতে চান তার অধ্যবশায়, সততা , সহনশীলতা , নিরপেক্ষতা থাকা অত্যবশ্যক। তাঁকে বর্জন করতে হবে লোভ ও লালসা ।



No comments

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.