বিশ্বের বেশিরভাগ সফল এবং ধনী মানুষদের একটা জায়গায় খুব মিল আছে
বিশ্বের বেশিরভাগ সফল এবং ধনী মানুষদের একটা জায়গায় খুব মিল আছে, সেটা হলো তাঁরা প্রায় সবাই প্রচুর বই পড়েন। ওয়ারেন বাফেট একবার এক সাক্ষাতকারে বলেন তিনি তাঁর দিনের শতকরা ৮০ ভাগ সময় বই পড়ে ব্যয় করেন, প্রতিদিন প্রায় ৫০০ পাতা পড়েন তিনি। ফেইসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবারগ বছরে ৫০ এর অধিক বই পড়ে থাকেন।
সফল উদ্যোক্তা হতে হলে বাকিদের থেকে কিছুটা এগিয়ে তো থাকতেই হবে। আর সেজন্য দরকার প্রচুর পড়াশোনা। চারপাশ থেকে শেখার পাশাপাশি উদ্যোক্তারা শেখেন বই পড়ে। উদ্যোক্তার পড়া উচিত এমন ১০টি বইয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে বাণিজ্য সাময়িকী বিজনেস ইনসাইডার। আসুন এক নজরে দেখে নেই উদ্যোক্তাদের অবশ্যই পড়া উচিৎ এমন ৯ টি বইঃ
১. দ্য এফেক্টিভ এক্সিকিউটিভস : পিটার ড্রাকার
অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস তাঁর সিনিয়র ম্যানেজারদের এই বইসহ আরো দুটি বই পড়ার পরামর্শ দেন। অফিস ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছেন লেখক পিটার ড্রাকার। এ ছাড়া নির্বাহীদের সময় ব্যবস্থাপনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কেও বিস্তারিত লিখেছেন তিনি।
২. দ্য ইনোভেটরস ডিলেমা : ক্ল্যাটন ক্রিস্টেনসন
জেফ বেজোসের পছন্দের আরেকটি বই। এটিও তিনি কর্মীদের পড়ার পরামর্শ দেন। উদ্যোক্তাদের খুবই পছন্দের বই এটি। সামাজিক উদ্যোক্তা স্টিভ ব্ল্যাংক বইটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘বড় বড় প্রতিষ্ঠান কেন ডাইনোসরের মতো আচরণ করে সেটার একটা যুক্তিসংগত কারণ ও উত্তর দিয়েছেন ক্ল্যাটন। উদ্যোক্তাদের অবশ্যই বইটি পড়া উচিত। তাহলে বাজারে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীদের কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটা তাঁরা বুঝতে পারবেন।’
৩. বিজনেস অ্যাডভেঞ্চার্স : জন ব্রুকস
বিল গেটসের খুবই পছন্দের বই। ১৯৯১ সালে ওয়ারেন বাফেট এই বই তাঁকে পড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বইটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘সব ব্যবসাতেই উদ্যোক্তাদের কিছু শক্তি ও দুর্বলতা থাকে। তাদের সবসময় চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে হয়। কিন্তু বিজনেস অ্যাডভেঞ্চার্স বইটি সব পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তাদের কাজে লাগবে।’
৪. বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন : ওয়াল্টার ইসাকসন
গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ও বিলিওনিয়ার এলোন মুস্কের পছন্দের বই এটি। বইটি সম্পর্কে মুস্ক বলেন, ‘বইটা পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন ফ্রাঙ্কলিন কেন উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি একেবারে শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। বাড়ি থেকে পালিয়েও গিয়েছিলেন তিনি।’
ওয়াল্টার ইসাকসনের লেখা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের জীবনী ‘আইনস্টাইন : হিজ লাইফ অ্যান্ড দ্য ইউনিভার্স’ও পড়ার পরামর্শ দেন মুস্ক।
৫. থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ : ন্যাপোলিওন হিল
ফ্যাশন হাউস ফুবুর সহপ্রতিষ্ঠাতা ডায়মন্ড জন বইটি সম্পর্কে বলেন, ‘থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ – আমার জীবন বদলে দিয়েছে। এই বই আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে নিজের লক্ষ্য ঠিক করতে হয়। আমাদের বেশির ভাগ মানুষেরই লক্ষ্য ঠিক থাকে না বলে আমরা সাফল্য পাই না।’
৬. কনশাস ক্যাপিটালিজম : জন ম্যাকি ও রাজ সিসোদিয়া
দ্য কনটেইনার স্টোরের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কিপ টিনডেলের মতে উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ীদের জন্য এটা অবশ্যই পাঠ্য বই। কিপ টিনডেল বলেন, ‘সবাই মুনাফা চায়, কেউ লোকসান চায় না। বিজনেস স্কুলগুলো এ নিয়ে অনেক গবেষণা করেছে, ছাত্রদের পড়িয়েছি কিন্তু এই বই সবচেয়ে ভালোভাবে মুনাফা তুলে আনার বিষয়টি বর্ণনা করেছে।’
৭. অ্যাজ আ মেন থিংকেথ : জেমস অ্যালেন
হেজ ফান্ডের এক্সিকিউটিভ কোচ টনি রবিনস বলেন, ‘আমি অ্যাজ আ ম্যান থিংকেথ বইটি ১২ বারেরও বেশি পড়েছি। বইটির ভাষা সাবলীল এবং খুব নির্দিষ্টভাবে বিষয়গুলো বর্ণনা করা হয়েছে এতে।’
ব্রিনের ভাষ্যমতে, ‘নিজের কাজের ক্ষেত্রে তো তিনি সফল ছিলেনই। এ ছাড়া তিনি ছিলেন উদার মনের মানুষ। বইতে তিনি লিখেছেন, তিনি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মতো একজন বিজ্ঞানী ও শিল্পী হতে চেয়েছিলেন। এই বিষয়টা আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছে। আমার মনে হয় এ ধরনের স্বপ্নই আপনার জীবনকে পরিপূর্ণ করে।’
No comments